চুল ও ত্বকের যত্নে অলিভ অয়েল এর জুড়ি মেলা ভার। অলিভ অয়েল বা জলপাই তেল একটি উদ্ভিজ্জ তেল। জলপাই গাছের বৈজ্ঞানিক নাম (ওলেয়া ইউরোপিয়া)। জলপাই গাছের ফলের রস থেকে এটি তৈরি হয়। এটি অনেক বরকতময় তেল রাসূল সা. এই তেল খেতে ও মালিশ করতে বলেছেন। তিনি বলেন, তোমরা যায়তুনের তেল খাও এবং এর দ্বারা মালিশ কর বা শরীরে মাখ। কেননা, এটি বরকতময় গাছ থেকে তৈরি হয়। [তিরমিযী, আহমদ, ইমাম আলবানী সহীহ বলেছেন] লেবানন, সিরিয়া, তুরস্কের সামুদ্রিক অঞ্চল এবং ইরানে এই তেল বেশি পাওয়া যায়।
ত্বকে ও চুলের যত্নে অলিভ অয়েল ব্যবহারের উপকারিতা
- আমাদের ত্বকে পানির পরিমাণ কমে গেলে ত্বক রুক্ষ হতে শুরু করে। নিয়মিত অলিভ অয়েলের ব্যবহার এই ঘাটতির আশঙ্কা দূর করে। প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন এ ও ই-এর পাশাপাশি এই তেলে ভিটামিন ডি ও কে থাকে, যা ত্বকের সবচেয়ে সংবেদনশীল অংশকেও সর্বোচ্চ নিরাপদ রাখে।
- কনুই বা হাঁটু ছিলে যাওয়া চামড়া অথবা কোনো হালকা আঘাতে অলিভ অয়েল ব্যবহার বেশ কার্যকরী। পাশাপাশি মুখের ব্রণ রোধেও ভূমিকা রাখে এটি।
- অলিভ অয়েলে থাকা অলিক এসিড ত্বকের নতুন কোষ জন্মাতে সাহায্য করে, মুখের ত্বককে করে তোলে আরও নরম এবং এনে দেয় মুখের স্বাভাবিক উজ্জ্বলতা।
- এই তেলে পলিফেনল নামক অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকে, যা বয়স্ক হওয়ার জন্য দায়ী ফ্রি র্যাডিকেল তৈরি হতে দেয় না। আবার সন্তান হওয়ার পর মহিলাদের পেটে সাদা রঙের দাগ কমাতে জলপাই তেল ব্যবহার করা হয়।
- মেকআপ তোলার জন্য বিভিন্ন সামগ্রী বাজারে পাওয়া গেলেও, এগুলোতে মুখের স্থায়ী ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। কিন্তু অলিভ অয়েল সরাসরি বা প্যাডে মেখে মুখে লাগালে ত্বকের ক্ষতি হওয়ার কোনো সম্ভাবনাই থাকে না।
- চুল সুরক্ষিত রাখার জন্য চুলের বৃদ্ধি ও উজ্জ্বলতা বাড়াতে এই তেল ব্যবহার করা হয়। এছাড়া চুলের আগা ভেঙে যাওয়ার মত সমস্যাকেও দূর করে এবং চুলের ঘনত্ব বাড়িয়ে তোলে।
রান্নায় অলিভ অয়েল ব্যবহারের উপকারিতা
এই তেল ত্বক চুলে ব্যবহারে পাশাপাশি বিভিন্ন রান্নায় এই তেল ব্যবহার করা হয়। অন্যান্য তেলের পরিবর্তে ব্যবহার করতে পারেন, বিভিন্ন রান্নায়, সালাদের সাথে এই তেল ব্যবহার করা যায়। অন্যান্য তেলের তুলনায় এই তেল ব্যবহার, রান্নার পুষ্টিগুণ বাড়িয়ে দেয় দ্বিগুণ।
- অলিভ অয়েল স্ট্রোক প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে। বেশ কিছু গবেষণায় প্রমাণ পাওয়া গেছে যে যারা অলিভ অয়েল খান তাদের স্ট্রোকের ঝুঁকি অনেক কম থাকে।
- মনোস্যাচুরেটেড ফ্যাট উচ্চ তাপের জন্যও বেশ উপযোগী তাই রান্নার জন্য একটি স্বাস্থ্যকর তেল হিসেবে অলিভ অয়েল বা জলপাই তেল ব্যবহার করা যায়। যা খাবারের পুষ্টিগুণ বহুগুণে বাড়িয়ে দেয়।
- উপকারি ফ্যাটি অ্যাসিড ছাড়াও এতে পর্যাপ্ত পরিমাণে ভিটামিন ই এবং কে রয়েছে এছাড়াও অলিভ অয়েলে শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্টে ভরপুর যা দীর্ঘস্থায়ী রোগের ঝুঁকি কমাতে পারে।
- এক্সট্রা ভার্জিন অলিভ অয়েল হৃদরোগের বিরুদ্ধে লড়াই করে এবং আপনাকে রাখবে সুস্থ।
- খাবারে অলিভ অয়েল ব্যবহার করলে শরীরের কোলেস্টরেলের মাত্রা নিয়ন্ত্রিত হয়।
- অলিভ অয়েল দিয়ে তৈরিকৃত খাবার খেলে যকৃৎ পরিষ্কার থাকে ।