Blog
ব্রণের সমস্যা ও তার সমাধান !
ব্রণ (acne vulgaris, সাধারণ ব্রণ) একটি রোগ যা বয়ঃসন্ধিকালে প্রায় সমস্ত কিশোর-কিশোরীদের হয়ে থাকে। এক্ষেত্রে মুখ, বুক এবং পিঠের লোমকুপে গুটিকা (follicles) হয়। এটি ব্যাকটেরিয়া দ্বারা সৃষ্ট নয়, যদিও ব্যাকটিরিয়া এর বিকাশে ভূমিকা রাখে।
কিছু মহিলাদের ২০-এর শেষের দিকে ব্রণ ওঠা অস্বাভাবিক কিছু নয়। ব্রণ সাধারণত তিন ধরণের ক্ষত দ্বারা চিহ্নিত করা হয়: কমেডো বা ব্ল্যাকহেড(Blackhead); ব্যাথা বা প্রদাহজনক গুটি এবং ফুস্কুড়ি।
ব্রণ ত্বকে যেভাবে দেখা যায় তা হলো- অবরুদ্ধ ছিদ্র, যা ব্ল্যাকহেডস বা হোয়াইটহেডস নামে পরিচিত, লাল রঙের ফুস্কুড়ি যেগুলো পিম্পলস বা জিটস নামে পরিচিত এবং মাঝে মধ্যে সিস্ট বা ছোটা ছোট ফোঁড়ার মতো হয়ে থাকে।
ড্রেস-আপের পণ্য ব্যবহার করে ব্রণের সমস্যা দূর করতে পারেন। বর্তমানে বাজারে একটি ফেস প্যাক রয়েছে যা আপনার ব্রণ এবং ব্রণের দাগ সম্পূর্ণ নির্মূল করবে, এর নাম ‘সতেজ মন্ত্র’। তবে সতেজ মন্ত্র ব্যবহারে আপনার ব্রণ দূর না হয়, বুঝতে হবে আপনার হরমোনাল ইমব্যালেন্সের জন্য হচ্ছে, এই সময় আপনি একজন ডারমাটোলজিস্টের পরামর্শ নিন।
ব্রণ কেন হয় আমরা জানি কি?
ব্রণের আকার বাড়ার সাথে সাথে দেয়ালটি ফেটে গিয়ে পুঁজ জাতীয় পদার্থ বের হতে পারে। তখন সাধারণ ব্যাকটেরিয়াগুলি ত্বকের গভীর স্তরগুলিতে প্রবেশ করতে পারে এবং শেষ পর্যন্ত ব্যাথা বা প্রদাহ সৃষ্টি করে।
কি কি কারণে ব্রণ হতে পারে:
বাবা-মা প্রায়ই কিশোর-কিশোরীদের পিৎজা, ভাজা-পোড়া খাবার এবং জাঙ্ক ফুড (junk food) খেতে নিষেধ করেন। যদিও এই খাবারগুলি স্বাস্থ্যের জন্য খুব একটা ভাল নয়। তবে এসব খাবার ব্রণের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ কার্যকরী ভূমিকা রাখতে পারে বলে সাম্প্রতিক কিছু গবেষণায় দেখা গেছে। এসব খাবারের মধ্যে উচ্চ-কার্বোহাইড্রেট আছে এমন খাদ্য, দুধ এবং খাঁটি চকোলেট। ত্বকে ধূলা-বালির কারণে লোমকূপ বন্ধ হয়েও ব্রণ হতে পারে। কোনো কোনো প্রসাধনী দীর্ঘদিন ধরে ব্যবহারের ফলে ব্রণ হতে পারে।
কিছু ক্ষেত্রে মানুষের মানসিক চাপ ব্রণ বৃদ্ধি করে এবং এগুলো দীর্ঘস্থায়ী করে তোলে।
এছাড়াও অতিরিক্ত গরম এবং বাতাসের আর্দ্রতা বেশি হলে পিঠে এবং উরুতে ব্রণ হতে পারে। কখনো কখনো মহিলাদের মাসিকের সাপ্তাহ খানেক আগে মুখে ব্রণ হতে পারে। আবার কোন কোন প্রসাধনী অনেক দিন ব্যবহারের ফলে এবং সাবান দিয়ে মুখ ধোয়ার কারণে ব্রণ হতে পারে। বয়সন্ধি,আবহাওয়ার পরিবর্তন, ধুলাবালি, ভুল প্রসাধনী যা আপনার ত্বকে কার্যকরী নয় এমন সব কারণেও ত্বকে ব্রণ হয়
ব্রণ সমস্যার সমাধান:
১। পরিমিততা এবং নিয়মিততা অবশ্যই শরীরের জন্য ভাল। প্রতিদিন আট ঘন্টা ঘুমাতে হবে, স্বাস্থ্যকর খাবার খেতে হবে এবং প্রচুর পরিমাণে পানি পান করতে হবে। ব্রণ হলে অবশ্যই হাত দিয়ে টিপে দেয়া যাবে না তাহলে মুখে দাগ হবে।
২। ব্লাকহেড (Blackhead) অপসারণের জন্য সতেজ মন্ত্র ব্যবহার করুন।
৩। হালকা ক্লিনজিং বার বা তরল, ফেস মাস্ক (উদাহরণস্বরূপ- সতেজ মন্ত্র, COSRX Acne Pimple Master Patch, Fruit of the wokali collagen anti spot fairness cream, Mistine Acne Clear Facial Foam, Ponds Acne Clear Facial Foam দিয়ে দিনে একবার বা দুবার ধুলে ত্বককে পরিষ্কার রাখবে এবং সংবেদনশীলতা এবং জ্বালা-পোড়া হ্রাস করবে। তাছাড়া সতেজ মন্ত্র ব্রণের সমস্যাও দূর করে।
৪। অতিরিক্ত তেল কমিয়ে ফেলুন। তেল মুছে ফেলতে মৃদু অ্যাস্ট্রিনজেন্ট / টোনার ব্যবহার করুন।
৫। দাগ মুছে ফেলতে water-based (জল ভিত্তিক) প্রসাধনী ব্যবহার করতে পারেন।
৬। এর একটি জনপ্রিয় ঘরোয়া প্রতিকার হ’ল জিটে/ পিম্পলের উপর টুথপেস্ট লাগানো।
৭। প্রতিদিন দুবার আলতো করে ত্বক পরিষ্কার করুন।
৮। প্রতিদিন একটি ক্রিম অথবা জেল ব্যবহার করুন যার মধ্যে ৫% বেনজয়াই পারক্সাইড রয়েছে। যেমন- Superdrug Vitamin E Cream, Shameiqi Noble Lady Cream, Fruit of The Wokali Cocoa Butter Cream, Loreal Paris Revitalift Day Cream, Loreal Paris Collagen Re-Plumper Night Cream, Loreal Collagen Day/Night Cream, Snail Truecica Miracle Repair Cream ইত্যাদি।
জেলগুলোর মধ্যে রয়েছে- Loreal Fine Flowers Gel Cream Wash, G.R. Purifying Cleansing Gel, Nivea Facial Wash Gel।
৯। রাতে সালফারযুক্ত একটি স্পট ক্রিম লাগান। বাজারে ভালো মানের ক্রিমগুলো রয়েছে উপরে দেখে নিতে পারেন এসব ক্রিমের কার্যকারিতা।
১০। ভাল মানের মেকআপ এবং ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করুন।
১১। ত্বকে তেল আছে এমন কোন কসমেটিকস বা মেকআপ ব্যবহার করা যাবে না।
ব্রণ একটি সাধারণ সমস্যা। এটি নিয়ে উদ্বিগ্ন না হয়ে উপরের নিয়ম কানুনগুলো অনুসরণ করুন। আশা করছি আপনি ব্রণ সমস্যা কাটিয়ে উঠতে সক্ষম হবেন। ব্রণের সমাধান নিয়ে আরো পড়ুন