Dry Fruits, Organic Groceries, Seasonal Collection

খেজুর এর যত গুণাগুণ

খেজুর এর যত গুণাগুণ

খেজুর বেহেশতী খাবার। অনেকেই মনে করেন মিষ্টি খাবার মানেই তা শরীরের জন্য বেশি ভাল নয়। এই ধারণা কিন্তু মোটেও ঠিক নয়। কারণ খেজুর অনেক মিষ্টি ফল, তবুও এর মধ্যে সামান্য পরিমাণ ক্ষতিকর উপাদান নেই। বরং এটি খেলে সার্বিকভাবে শরীর অনেক ভালো থাকে। খেজুর খেতে যেমন সুস্বাদু, তেমনি এটি নানা ধরনের পুষ্টিকর উপাদানে ভরপুর। এটি হলো পুষ্টির প্রাকৃতিক উৎস। খেজুরের মধ্যে ক্যালরি, শর্করা, প্রোটিন, মিনারেলস, ভিটামিন এ, বি, সি, ই, কে, লৌহ, ক্যালসিয়াম, ম্যাঙ্গানিজ, পটাশিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম, ফসফরাস, দস্তা, সোডিয়াম এর মতো গুরুত্বপূর্ণ উপাদান পাওয়া যায়।

বিভিন্ন ধরনের খেজুর পৃথিবীতে রয়েছে। স্বাদের দিক থেকে আমরা বিভিন্ন ধরনের খেজুর দেখতে পাই, যেমন- মারিয়াম, আজওয়া, আনবারা, সাফাওয়ি, খালাস, মুসকানি, শালাবি, বেরহি, ডেইরি, ওয়ান্নাহ, মাবরুম, সেফরি, সুক্কারি, খুদর প্রভৃতি খেজুর। এদের মধ্যে সবচেয়ে জনপ্রিয় হলো আজওয়া(Ajwa Dates) এবং মারিয়াম(Maryam Dates) খেজুর। আমাদের প্রিয় নবী মুহাম্মদ(সাঃ) খেজুর পছন্দ করতেন।

১০০ গ্রাম খেজুরের মধ্যে যেসব পুষ্টিগুণ পাওয়া যায় –
ফ্যাট ০.৪ মিলিগ্রাম, ক্যালোরি ২৮২ মিলিগ্রাম, পটাসিয়াম ৬৫৬ মিলিগ্রাম, সোডিয়াম ২ মিলিগ্রাম, কার্বোহাইড্রেটেড ৭৫ মিলিগ্রাম, সুগার ৬৩ মিলিগ্রাম, ফাইবার ৭ গ্রাম, ক্যালসিয়াম ৩%, প্রোটিন ২ গ্রাম, আয়রন ৫%, ম্যাগনেসিয়াম ১৪%, ভিটামিন বি-৬ ১০%, কপার ১৮%।

মরিয়ম খেজুর কেন খাবেন?

কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখে, হার্টের সুস্থতায় উপকারী, কিডনি এবং লিভারের সুস্থতায় উপকারী, ত্বক ভালো রাখতে এবং দৃষ্টি শক্তি বৃদ্ধিতে ভূমিকা রাখে, নিয়মিত এই খেজুর খেলে লাংস এবং ক্যাভিটি ক্যন্সারের ঝুঁকি কমে আসে। হজম শক্তি বৃদ্ধিতে সাহায্য করে, খেজুর হলো প্রাকৃতিক স্ন্যাকস। হালকা নাশতা হিসেবে। এটি স্বাস্থ্যের জন্য খুবই কার্যকরী, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে, প্রোটিনের অন্যতম উৎস হওয়ায় শারীরিক দূর্বলতা দূর করতে সাহায্য করে।

আসুন আজকে জেনে নেই খেজুর এর কিছু গুণাগুণ-
শরীরের শক্তি বৃদ্ধি করে: খেজুরে যেহেতু প্রচুর পরিমাণে প্রাকৃতিক সুগার থাকে, তাই এই ফলটি খেলে নিমেষেই শরীরের শক্তি বেড়ে যায়।

  • হার্ট ভালো রাখে: একথা প্রায় সবারই জানা যে, খেজুরে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার থাকে। তাই এই ফলটি খেলে হার্ট যেমন ভালো থাকে, তেমনি রক্তচাপও নিয়ন্ত্রণে থাকে। ফলে হার্ট অ্যাটাকের আশঙ্কা অনেক কমে যায়। 
  • ঠান্ডা কমায়: ঠান্ডায় খুব হাঁচি-কাশি হলে এখনই ২-৩ টে খেজুর, কিছুটা মরিচ আর ১-২ টা এলাচ নিয়ে গরম পানিতে সেদ্ধ করে নিন। এবার শুতে যাওয়ার আগে ওই পানি খেয়ে নিন। দেখবেন ঠান্ডা কেমন দূরে পালাচ্ছে।
  • শরীর গরম রাখে: খেজুরে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার, ক্যালসিয়াম, আয়রন, ভিটামিন এবং ম্যাগেনশিয়াম থাকার কারণে এটি শরীর গরম রাখতে সহায়তা করে। এ কারণেই চিকিৎসকেরা শীতকালে এই ফলটি খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন।
  • অ্যাজমা সারায়: শীতে যে যে রোগের ভয় একটু বেশি থাকে তার মধ্যে অন্যতম হল হাঁপানি বা অ্যাস্থেমা। প্রতিদিন সকালে আর বিকালে নিয়ম করে ১-২ টো খেজুর খেলে শীতকালে আর হাঁপানির সমস্যা হবে না আপনার।
  • কোষ্ঠকাঠিন্য সারায়: খেজুরে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার থাকার কারণে কোষ্ঠকাঠিন্য সারাতে দারুন কাজে আসে।
  • উচ্চ রক্তচাপ কমাতে সাহায্য করে: পটাশিয়াম আর ম্যাগনেশিয়াম উচ্চ রক্তচাপ কমাতে সহায়তা করে। আর এই দুটি খনিজ খেজুরে প্রচুর পরিমাণে থাকায় এই ফলটি খেলে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে থাকে। তাই যারা উচ্চ রক্তচাপের সমস্যায় ভুগছেন, তারা প্রতিদিন ৫-৬টা খজুর খেতে অবশ্যই ভুলবেন না যেন!

মায়েদের জন্য খেজুর:

আল্লাহ পবিত্র কুরআনে মরিয়মকে যেভাবে এই ফলটি খাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন, তাতে যথেষ্ট যুক্তি রয়েছে। খেজুর গর্ভবতী মহিলাদের এবং যারা সবেমাত্র জন্ম দিয়েছেন তাদের জন্য খাবারের একটি দুর্দান্ত উপকারী ফল। এটি একটি বহুল স্বীকৃত বৈজ্ঞানিক সত্য। খেজুরের মধ্যে সর্বোচ্চ চিনি স্তর রয়েছে, 60-65%। চিকিৎসকেরা সুপারিশ করেন যে, গর্ভবতী মহিলাদের জন্মের দিন ফল ও চিনিযুক্ত খাবার দেওয়া উচিত। এর উদ্দেশ্য হলো, মায়ের দুর্বল শরীরকে শক্তিশালী এবং পুনরুজ্জীবিত করা। একই সাথে দুধের হরমোনকে উদ্দীপিত করা এবং নবজাতক শিশুর জন্য প্রয়োজনীয় মায়ের দুধের পরিমাণ বাড়ানো।

খেজুর শরীরকে অসুস্থতা এবং সংক্রমণের হাত থেকে রক্ষা করতে, কোষগুলিকে পুনর্নবীকরণ এবং তরল ভারসাম্য নিশ্চিত করার সক্ষমতা বাড়ায়। খেজুর সম্পর্কে এই সমস্ত তথ্য মানুষের জন্য আল্লাহর অসীম জ্ঞান এবং মমতা প্রকাশ করে। যেমনটি আমরা দেখেছি, খেজুর এর গুণাগুণ, বিশেষত গর্ভাবস্থাকালীন এবং সম্প্রতি আধুনিক চিকিৎসা বিজ্ঞানের দ্বারা প্রতিষ্ঠিত। যা বহু বছর আগে কুরআনে ইঙ্গিত করা হয়েছিল।

মারিয়াম খেজুর (Maryum Khajoor) এবং আজওয়া খেজুর (Ajwa Khajoor) সবচেয়ে বেশি পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ এবং সুস্বাদু। এই খেজুরে যে জলীয় অংশ থাকে, সেটি অনেক বেশি শক্তিবর্ধক। আপনারা চাইলে এখানে ক্লিক করে ভাল মানের গ্যারান্টিযুক্ত মরিয়ম খেজুর অথবা আজওয়া খেজুর অনলাইনে অর্ডার করতে পারেন

যাঁদের জন্য ক্ষতিকর:


যাঁদের শরীরে পটাশিয়ামের পরিমাণ বেশি এবং ডায়াবেটিস রয়েছে, তাঁদের বেলায় পুষ্টিবিদের পরামর্শ নিয়ে খেজুর খাওয়া উচিত।

সর্বোপরি এর খাদ্যগুণের জন্য রমজান মাসে মুসলমানরা ইফতার করেন এই ফল দিয়েই। কারণ রোজার কারণে শরীরের বিপুল পরিমাণ শক্তির দরকার পরে, আর খেজুর খাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই শরীরের ক্লান্তিভাব দূর হয়। এখানেই শেষ নয়, যারা নিজের ওজন কমাতে ইচ্ছুক তাদের জন্যও এই ফলটি খাওয়া জরুরি। কারণ খেজুর ওজন কমাতে দারুন কাজে আসে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *