এলাচের (elaichi) প্রথম উল্লেখ সুমের এবং ভারতের আয়ুর্বেদিক সাহিত্যে পাওয়া যায়। আজকাল এটি গুয়াতেমালা, মালয়েশিয়া এবং তাঞ্জানিয়ায়ও চাষ হয়। এলাচকে (Cardamom) মসলার রাণী বলা হয়। এটি খাবারে অতিরিক্ত স্বাদ বাড়ানোর জন্য ব্যবহার করা হলেও রান্নার স্বাদ বাড়ানো ছাড়াও স্বাস্থ্যের জন্য বিশেষ উপকারী। ভালো মানের নির্ভরযোগ্য এলাচ আপনারা ড্রেসআপ বাংলাদেশ থেকে কিনে নিতে পারেন। এখানে অর্গানিক এবং আয়্যুর্বেদিক পণ্য খুবই ভালো মানের হয়ে থাকে এবং নিঃসন্দেহে বিশ্বাসযোগ্য প্রতিষ্ঠান।
দুই ধরনের এলাচ আমরা দেখতে পাই:
- সাদা বা সবুজ এলাচ এবং
- কালো এলাচ
সাদা এলাচি হিসাবে প্রায়শই যা উল্লেখ করা হয় তা হ’ল সিয়াম এলাচ। দুই ধরনের এলাচই খাবার এবং পানীয়তে রান্না মশলা এবং ওষুধ হিসাবে ব্যবহার করা হয়।
এলাচের উপকারিতা:
এলাচ গ্যাস্ট্রিক সমস্যা প্রতিরোধ করে, অ্যাসিডিটি বা গ্যাস্ট্রিক সমস্যা দূর করতে চিবাতে পারেন একটি এলাচ। এটি ডাইজেস্টিভ সিস্টেমকে (digestive system) সক্রিয় রাখে এবং হজমে সাহায্য করে। পেটের যে কোনও সমস্যা যেমন বদহজম নিরাময়ে সহায়তা করে। এক কাপ গরম পানিতে একটি এলাচ থেতলে দিয়ে পান করুন। দেখবেন হজমের সমস্যা দূর হয়ে গেছে।
এলাচ বিভিন্ন রকমের সমস্যা যেমন সর্দি, কাশি, ফুসফুসের সমস্যা ও রক্ত সঞ্চালনের সমস্যা ইত্যাদি থেকে মুক্তি দেয় এবং ফুসফুসে অক্সিজেন সরবরাহ বৃদ্ধি করে। ব্রঙ্কাইটিস বা শ্বাসপ্রশ্বাসের কোনো রকম সমস্যা থাকলে এলাচ খাওয়া ভালো। মধু, লেবুর রস ও গরম জলের সঙ্গে একটা এলাচ মিশিয়ে দিয়ে পান করলে শ্বাসকষ্ট দূর করবে।
এলাচের অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট রক্তচাপ স্বাভাবিক রাখে। উচ্চ রক্তচাপের সমস্যায় এলাচ খুব উপকারী। স্যুপ বা স্টু-এর মধ্যে এলাচ মিশিয়ে খেলে খুব দ্রুত রক্তচাপ নীচে নামতে শুরু করে। এ ছাড়া এলাচ রক্তসঞ্চালনে সহায়ক। এলাচের গুঁড়ার সঙ্গে মধু মিশিয়ে খেলে হৃদরোগে উপকার পাওয়া যায়।
ডিপ্রেশনের মতো মানসিক সমস্যার হাত থেকে বাঁচতে এলাচ দারুণ সাহায্য করে। গরম পানিতে এলাচ গুঁড়ো ও মধু দিয়ে ফুটিয়ে এক কাপ গরম এলাচ চা খেয়ে দেখুন। দেখবেন মাথা ব্যাথা নিমেষেই দূর হয়ে গিয়েছে। প্রতি দিন চায়ের মধ্যে কয়েক দানা এলাচ দিয়ে পান করা ভালো।
এলাচ ক্যান্সারের সাথে লড়াই করতে পারে এবং টিউমার বৃদ্ধি বন্ধ করে দিতে পারে।
এলাচের অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট কোষকে ক্ষতি থেকে রক্ষা করে এবং আপনার দেহে প্রদাহ রোধ করতে সাহায্য করে। এলাচ, বেল ও দুধ পানির সঙ্গে মিশিয়ে ভালো করে গরম করুন। দুধ যখন ঘন হয়ে আসবে তখন তা একটু ঠাণ্ডা করে খেলে কোষ্ঠকাঠিন্য ও জ্বর কমে যাবে।
এলাচ হজমের সমস্যা দুর করে। এর মধ্যে রয়েছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও অ্যান্টিইনফ্লেমেটরি উপাদান যা হজমে সহায়তা করে। এলাচ খিদে বাড়াতে সাহায্য করে। এলাচের তেল ব্যবহার করলে খাওয়ার প্রতি ইচ্ছে বাড়ে ও খিদেও বাড়ে।
মুখের দুর্গন্ধ দূর করতে সহায়তা করে। এলাচের অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল উপাদান মাড়ি ও দাঁতের খুব উপকার করে। এলাচের ঝাঁঝালো স্বাদ নিঃশ্বাসের দুর্গন্ধ দূর করে ও তরতাজা ভাব আনে। বড় এলাচ বেটে গায়ে মেখে কিছুক্ষণ পর গোসল করে ফেললে গায়ের দুর্গন্ধের মতো অস্বস্তিকর অবস্থা দূর হয়ে যাবে।
এলাচ শরীরের মেদ কমাতে সহায়তা করে। এটি স্নায়ুকে শান্ত করে ও যৌনইচ্ছাকে বাড়িয়ে তোলে। এ ছাড়া, বন্ধ্যাত্ব থেকে মুক্তি পেতেও এলাচ সাহায্য করে। ত্বকে ব্রণ ও কালচে ভাব দূর করে। মধু ও এলাচের প্যাক বানিয়ে মুখে লাগিয়ে ফল পেতে পারেন। এলাচ দিয়ে ঠোঁটের নানা রকমের বাম, গ্লস বা তেল তৈরি হয় যা ঠোঁটের কোমলভাব ফুটিয়ে তোলে। গোলাপি ভাব বজায় রাখে। এলাচের মধ্যে থাকা পুষ্টিকর উপাদান চুলের গোড়া মজবুত করে চুলকে ঝলমলে ও লম্বা করতে সাহায্য করে। অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকার ফলে মাথার ত্বক ভালো রাখে। এলাচ চুলের ফলিকলগুলিকে মজবুত করে। এলাচ ভেজানো পানি দিয়ে চুল ধুলে বা এলাচের গুঁড়ো চুলে লাগানোর পর শ্যাম্পু করলে সব থেকে ভালো ফল পাওয়া যায়।
রান্নায় এলাচ ব্যবহার করা বেশিরভাগ মানুষের পক্ষে সম্পুর্ণ নিরাপদ।
এলাচের খাদ্য ও পুষ্টিগুণ –
এতে আছে প্রোটিন, কোলেস্টেরল, কার্বোহাড্রেট, ক্যালোরি, ফাইবার, ফ্যাট, নিয়াসিন, পাইরিডক্সিন, থিয়ামিন, রাইবোফ্ল্যাভিন, ইলেকট্রোলাইট, পটাশিয়াম, সোডিয়াম, ক্যালসিয়াম, আয়রন, কপার, ম্যাগনেশিয়াম, ফসফরাস, ম্যাঙ্গানিজ, ভিটামিন এ, জিঙ্ক, সি ইত্যাদি।
ব্রণের সমাধান সম্পর্কে জেনে নিন