মাটির নিচে যে তরঙ্গ বা কম্পনের সৃষ্টি হয় তাই ভূমিকম্প, যার ফলে ধ্বংস স্তূপে পরিণত হয় মাটির উপরিভাগ। বিশ্বের বিভিন্ন দেশ ভূমিকম্পের ফলে অনেক ক্ষয়-ক্ষতির শিকার হয়েছে। বিশেষজ্ঞের মতে, জাপান, চিলি, ইন্দোনেশিয়া, তুরস্ক, মেক্সিকো এবং পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতসহ বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চল ভূমিকম্পের ঝুঁকিতে রয়েছে।
ভূমিকম্পের সময় করণীয়
ভূমিকম্প যখন শুরু হয় আমরা সবাই আতঙ্কিত হয়ে যাই এবং ভূমিকম্পের সময় করণীয় গুলো ভুলে যাই। এই সময় মাথা ঠান্ডা রাখতে হবে। ভূমিকম্প ১০ সেকেন্ড বা এর কিছু বেশি সময় হতে পারে। এই অল্প সময়ের মাঝে আমাদের শান্ত থেকে এবং মাথা ঠান্ডা রেখে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা ছাড়া আর কিছুই করার থাকে না।
ভূমিকম্পের সময় দুই ধরণের কম্পনের উৎপত্তি হতে পারে।
প্রথম ধাপে হালকা একটা ঝাঁকুনি বা ধাক্কা দেয় এবং দ্বিতীয় ধাপে অর্থাৎ ১০ সেকেন্ড বা ১৫ সেকেন্ড পর্যন্ত স্থায়ী হলে ক্ষতি সৃষ্টি করবে।
রুমে থাকা অবস্থায় আপনার করণীয়:
- এই কম সময়ের মাঝে বাসা থেকে খোলা স্থানে যাওয়ার মতো সময় থাকে না। আবার অনেকে তাড়াহুড়ো করে বের হওয়ার সময় দুর্ঘটনার শিকার হয়।
- এক্ষেত্রে আতঙ্কিত না হয়ে শক্ত কোনো টেবিল অথবা খাটের নিচে হাটু গেড়ে বসে পড়ুন।
- রুমের বিম অথবা পিলার কাছে হেলান দিয়ে দাঁড়ান।
- বড় কোন আসবাবপত্রের পাশে দাঁড়ানো থেকে বিরত থাকুন।
- আর বিছানায় থাকলে বালিশ অথবা কুশন দিয়ে মাথা এবং ঘাড় ডেকে রাখুন।
- এই সময় লিফট ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকুন এবং চেষ্টা করবেন সিঁড়ি ব্যবহার করার।
- নিরাপদ স্থানে যাওয়ার আগে রুমের ইলেকট্রিক এবং গ্যাস লাইন বন্ধ করার চেষ্টা করবেন।
- এক অথবা দুইতলা ভবন হলে বাহিরে বের হয়ে খোলা আকাশের নিচে অবস্থান করুন।
- অবশ্যই মনে রাখতে হবে ভূমিকম্পের সময় কাঁচ জাতীয় কোনো কিছুর পাশে অবস্থান করবেন না।
- একবার কম্পন হলে দ্বিতীয় বার আবার কম্পন হতে পারে তাই আসে পাশে খোলা মাঠ থাকলে দ্রুতই সেখানে অবস্থান নিতে হবে।
ঘরের বাহিরে থাকলে করণীয়
এই সময় বড় কোনো স্থাপনা, বৈদ্যুতিক খুঁটি, অথবা তার বা বড় গাছের পাশ থেকে দূরে থাকুন। খোলা একটা স্থানে শুয়ে পড়ুন অথবা হাঁটু গেড়ে কম্পন না থামা পর্যন্ত বসে থাকুন।
ভূমিকম্পের সময় গাড়িতে থাকলে করণীয়
অতিরিক্ত ঝাঁকুনি হলে গাড়ি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে বড় কোন এক্সিডেন্ট হতে পারে তাই এই সময় গাড়ি ধীরে চালানো অথবা স্টেয়ারিং বন্ধ করে গাড়িতে থাকাই ভালো হবে। তবে ট্রাফিক জ্যামে থাকলে আশেপাশে অনিরাপদ মনে হলে গাড়ি থেকে নেমে দ্রুত সরে পড়তে হবে উম্মুক্ত স্থানে।
উপকূলের জন্য বাড়তি সতর্কতা
কম্পনের সময় বড় নদী বা সুমুদ্র তীরে ২০ সেকেন্ড পর্যন্ত কম্পন না থামলে হতে পারে সুনামি। তাই এই সময় জীবন রক্ষায় তীর থেকে সরে যেতে হবে। অথবা নিকটস্থ কোন উঁচু স্থানে যাওয়া উত্তম। সর্বশেষ আমরা এই বিপদের সময় হতাশা হব না আমরা আমাদের সৃস্টি কর্তাকে স্মরণ করবো।